বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০১:২৭ অপরাহ্ন

নোয়াখালীতে রেকটিফাইড স্পিরিট পানে ৬ জনের মৃত্যু, ধারণা পুলিশের

নোয়াখালীতে রেকটিফাইড স্পিরিট পানে ৬ জনের মৃত্যু, ধারণা পুলিশের

স্বদেশ ডেস্ক:

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিষাক্ত রেকটিফাইড স্পিরিট পান করে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচজন। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই ছয়জনের মৃত্যু হয়। মারা যাওয়া লোকজনের পরিবার মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রাখায় গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত বিষয়টি থানা প্রশাসনের নজরে আসেনি।

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পুলিশ পৃথক দুইটি স্থানে অভিযান চালিয়ে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। তাঁরা হলেন বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুর নবী ওরফে মানিক (৫০) ও রবি লাল রায় (৫৭)। লাশ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মোহাম্মদনগরের মহিন উদ্দিন (৪০), টেকের বাজারের আবদুল খালেক (৭২) ও সিরাজপুরের মো. সবুজের (৬০) লাশ পরিবারের লোকজন দাফন করে ফেলে। শুক্রবার রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া লিটনের লাশ এখনো এলাকায় আনা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্পিরিট বিক্রির অভিযোগে রফিক হোমিও হলের মালিক মো. জায়েদ উদ্দিন ও তাঁর ছেলে মো. প্রিয়মকে আটক করেছে পুলিশ।

বিভিন্ন এলাকায় লোক মারা যাওয়ার খবর পেয়ে গণমাধ্যমের কর্মীরা মৃত ব্যক্তিদের বাড়িতে ভিড় করেন। তাঁরা মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করেন এবং এ নিয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ আছে কি না, জানতে চান। কিন্তু তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার রাত নয়টার দিকে তাঁরা তথ্য পান, বসুরহাট বাজারের একটি হোমিও ওষুধের দোকান থেকে রেকটিফাইড স্পিরিট কিনে খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাঁচ-ছয়জন লোক মারা গেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য কিংবা মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাননি। পরে রাতেই তিনি পুলিশের একাধিক টিম দিয়ে বসুরহাট পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিতে থাকেন। পরে তিনি মারা যাওয়া পাঁচজনের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হন। তবে ওই সব পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তাঁদের।

ওসি আরিফুর রহমান জানান, তিনি লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাত ১১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি শ্মশানে গিয়ে দেখেন ববি লাল রায়ের লাশ দাহ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তখন তিনি লাশটি উদ্ধার করেন। পরে একই ওয়ার্ডে মারা যাওয়া নুর নবী ওরফে মানিকের লাশও উদ্ধার করা হয়।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. জোবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুপুর ২টা ১০ মিনিটে মহিন উদ্দিন (৪০) ও রাত সাড়ে আটটায় নুর নবী (৫০) নামে দুই ব্যক্তিকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসেন। তিনি মৃত ঘোষণা করার পর তাঁরা লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্বজনেরা কিছু বলেননি। এক প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক মো. জোবায়ের বলেন, ‘তাঁদের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে শুনেছি রেকটিফাইড স্পিরিট পানে কয়েকজন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে ওই দুজনও আছেন। কিন্তু ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে না।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877